১. অস্তিত্বহীন
কখনো চেয়েছি জগৎখ্যাত মহাকাব্যের এক অনবদ্য চরিত্র হতে,
কখনো বা কোন এক দক্ষ ভাস্করের সাবলীল অবয়ব!
শত জুলুমের অবসানকারী এক মহা বিপ্লবী
মানুষের অন্তর চিড়ে কালান্তর পর্যন্ত এঁটে থাকতে!
অথবা কালজয়ী কোন এক যুবকের প্রেমান্ধ অভিপ্রায়!
এমনই একটা কিছু- যা এই নশ্বর পৃথিবীতে দুর্জয়।
২. ঠিকানা
আজি হইতে পঞ্চাশ বছর পরে,
এমনি কোন এক ঘোর বরষায়;
আমাকে চিঠি লিখে জানিও
পৃথিবীটা কেমন আছে;
আকাশের ঠিকানায়।
৩. জোৎস্না
বাঁশের বেড়া; চাল কুমড়ার চাল; মাটির বিছানা; কুপির আলো; চিটচিটে বালিশ; জোনাক জ্বলা অন্ধকার; গোয়াল ঘর; আধ ময়লা কাঁথা; জোৎস্না ঝরা উঠান; খোলা দরজা; কচু বনে ছাই; ভাত-ভর্তা ঝাল; ঝি ঝি ডাকা ভয়।
৪. সময় নেই
বিভিন্ন জাত-গোত্রের মানুষের সাথে হলো নাতো পরিচয়;
পূর্ব আর পরবর্তী প্রজন্ম তো অনেক দূর!
পৃথিবীর ঊষর-ধূসর ভূমি তো হাঁটলাম না সব;
সাত আসমান তো আরও দূর!
৫. খুঁজে ফিরি
জীবনে শান্তিটাই নাকি আসল!
আমি শান্তিতেই আছি।
কিন্তু মানবজাতি আমাকে ধিক্কার দিল যে, "আমি ব্যর্থ"।
সময়ের সদ্ব্যবহার করলাম।
সফলতার জয়-জয়কার,
দূর বহুদূর।
সুখ বলে বসল, "জীবনে সুখ জিনিসটা আর
চেখে দেখলি না"!
এরপর মাঝামাঝি এল।
বলল, "দুই নৌকায়ই পা রাখ,
শুধু বইঠাটা ধরে রাখ ঠিকঠাক;
যা অঘটন, ঘটে যাক"!
আমি এখন জীবনের মানে হাতড়ে বেড়াচ্ছি;
ঘন জঙ্গল আর মহাসাগর চষা শেষে ছুটছি এখন নক্ষত্রের কাছে!
৬. অসময়
বইটা তো ভাঁজ করে রাখা হলো না!
চশমাটা যে কোথায়!
আরেহ গ্লাসের পানিটা তো শেষ করি?
বলা নেই কওয়া নেই এমন হুট করে যে চলে এলে!
তোষকের নিচে একটা পাঁচশ টাকার নোট আছে কাউকে যে বলে যেতে হবে!
হাতে তো কয়েকটা কাজ ছিল,
শেষ করতে দিবে না?
এতসব ঝঞ্ঝাট!
জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর মৃত্যু আসা উচিত না?
সবচাইতে রহস্যময় ঘটনা হলো মৃত্যু;
এর আগে এর রহস্য উন্মোচন করতে কখনো ইচ্ছা হলো না কেনো!
৭. কৌতূহল
চলো মৃত্যুর প্রস্তুতি নেই।
চলো দুনিয়াকে পিছনে ফেলে যাই।
পৃথিবীর বাইরেটা খারাপ হবার কথা না!
মারবেল সদৃশ ছোট্ট পৃথিবীর বাইরের অসীমতা-
অবশ্যই লোভনীয়।
পৃথিবীর আর এমন কী বাকি!
ঐত রোগ শোক হাসি কান্না দুঃখ সুখ-
সে আমার জানা হয়ে গেছে।
ঐ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই কথা;
নতুন কিছু না।
৮. ভালোলাগা
আমার ভালো লাগছে না।
ভালো লাগবেটা কী করে!
পৃথিবী আমাকে বলে দিয়েছে, সে নাকি আমাকে আর মনে রাখবে না।
কী নির্দয়!
আমি সময়টাকে ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত কত কসরত, কত যোগাসন করে বেড়াচ্ছি;
আর সে! হুড় হুড় করে আমার বয়সটা বাড়িয়ে দিচ্ছে!
ইচ্ছা করে ঘটাং করে ঘণ্টার কাঁটাটা ভেঙ্গে দেই!