রবিবার, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫
২৩ ভাদ্র ১৪৩২

আপনি পড়ছেন : বিশ্ব

কাশ্মীর হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের দায় স্বীকার


খায়রুন নাহার ২৪ এপ্রিল ২০২৫, রাত ১২:০০
কাশ্মীর হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের দায় স্বীকার
ছবি:সংগৃহীত

২০১৯ সালে কাশ্মীর অঞ্চলে স্বল্প-পরিচিতি সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। এই গোষ্ঠী পেহেলগামে হামলার দায় স্বীকার করেছে। মঙ্গলবারের ওই হামলায় অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত ও আরও ডজনখানেক আহত হন।

এক দশকের মধ্যে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার খবর যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টেলিভিশনের পর্দায় ছড়িয়ে পড়েছিল।

কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরের বৈসরণের তৃণভূমিতে মনোরম এক রৌদ্রোজ্জ্বল বিকেলে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। তারা কাছাকাছি একটি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছিল।

স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলাকারীরা অন্তত ২৬ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের গুলিতে আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাঁদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের সবাই পুরুষ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, এই জঘন্য হামলার পেছনে যাঁরা আছে, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা হবে, তাঁদের কাউকেই ছেড়ে দেওয়া হবে নাততক্ষণে টিআরএফ এ হামলার দায় স্বীকার করে নেয়। যদিও এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলাকারীরা পলাতক।

টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বার্তায় টিআরএফ বলেছে, তারা কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বহিরাগতদের’ আবাসনের অনুমোদনের বিরোধিতা করে। সমালোচকেরা মনে করেন, এই বহিরাগতদের মাধ্যমে ভারত সরকার কাশ্মীরের বিতর্কিত অঞ্চলের জনমিতি পরিবর্তন করতে চায়। বার্তায় টিআরএফ জানিয়েছে, ‘যারা এখানে অবৈধভাবে বসতি গড়ার চেষ্টা করবে, তাদের ওপরই সহিংসতা চালানো হবে।’

দিও মঙ্গলবারের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলেন পর্যটকেরা। তাঁদের কেউ-ই কাশ্মীরে নতুনভাবে বসবাস শুরু করা বাসিন্দা ছিলেন না। তবু টেলিগ্রামের মতো যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে টিআরএফের দায় স্বীকার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অবাক করেনি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি এ হামলার ব্যাপারে ভারতের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অপ্রস্তুত থেকে থাকে, তাহলে সেটা মোদি সরকারের কাশ্মীর নীতির ঘাটতির ফল হিসেবে বিবেচিত হবে।

কাশ্মীরের প্রচলিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বেশির ভাগের নামেই ইসলামি পরিচয় স্পষ্ট থাকে। তবে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামটি সেই ধারার কাশ্মীরের প্রচলিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বেশির ভাগের নামেই ইসলামি পরিচয় স্পষ্ট থাকে। তবে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামটি সেই ধারার ব্যতিক্রম। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে, এই নামকরণ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করা হয়েছে, যেন গোষ্ঠীটির ‘নিরপেক্ষ চরিত্রের’ ভাবমূর্তি তৈরি হয়। ‘রেজিস্ট্যান্স’ বা ‘প্রতিরোধ’ শব্দটির মাধ্যমে কাশ্মীরি জাতীয়তাবাদের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক দশকের বেশি সময় ধরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম নিয়ে কাজ করা এক পুলিশ কর্মকর্তা এসব কথা বলেন।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ভারত সরকার টিআরএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, সংগঠনটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের নিয়োগ ও পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে অস্ত্র পাচারের অভিযোগ রয়েছে।