সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সিটি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান জানান, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে।
সোমবার তিনি বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমানে তাদের ১১ জন শিক্ষার্থী আমাদের হেফাজতে রয়েছে। হামলার সময় তাদের আটক করা হয়েছিল। ড্যাফোডিলের উপাচার্য উপস্থিত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হস্তান্তর করা হবে। সংঘর্ষের পুরো ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের ডিন বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা দুঃখিত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দেবে। সঙ্গে যারা ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কীভাবে তাদের হাতে অস্ত্র এল, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে কয়েকটি বাসে আগুন দিয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সম্পদ ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা দাবি করেছেন, ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক এবং ক্ষতিপূরণ প্রদান নিশ্চিত করা হোক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) আসাদুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ রাতভর কাজ করেছে। আমাদের সদস্যরাও হামলার শিকার হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
পুলিশ ও প্রশাসন জানায়, রবিবার সন্ধ্যার পর সিটি ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থী ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’-এর পাশে বসে ছিলেন। এ সময় সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর থুথু অসতর্কতাবশত মোটরসাইকেলে যাওয়া ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীর গায়ে লাগে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে বাক্যালাপের মাধ্যমে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী দেশি অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে এগিয়ে যান। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা হয়।
ঘটনায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমও উপস্থিত ছিলেন। তারা সিটি প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের আহ্বান জানান। একপর্যায়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীরা সিটি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে তিনটি বাস, একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেয় এবং আরও দুটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেল ও প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর চালায়।