শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫
৫ পৌষ ১৪৩২

আপনি পড়ছেন : রাজশাহী

এলাকাবাসীর মানববন্ধন

রাজশাহীতে স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হলো মেয়েকে

খায়রুন নাহার
রাজশাহীতে স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন
ছবি:সংগৃহীত

রাজশাহীর তালাইমারীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আকরাম আলী (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে শোক, ক্ষোভ প্রতিবাদের ঝড় বইছে। নিহত আকরাম আলীর মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে বৃহস্পতিবার সকালে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় তাকে।

এই মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকেলে তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।

নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণ' ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে এলাকাবাসী অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ১০টার দিকে তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় আকরাম আলী তার ছেলে ইমাম হোসেনের ওপর হামলা চালানো হয়। স্থানীয় বখাটে নান্টু তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। ইটের আঘাতে গুরুতর আহত আকরাম আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান।নিহতের পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত নান্টু দীর্ঘদিন ধরে আকরামের মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। নান্টু তার স্ত্রীকে মারধর করলে আকরামের স্ত্রী প্রতিবাদ করেন, যা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই নান্টু  তার সহযোগীরা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। ঘটনার আগের দিনও রাকিয়াকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেন নান্টু। বিষয়টি নিয়ে আকরাম আলী তার পরিবারের কাছে অভিযোগ করেন। সেই রাতেই প্রাণ দিতে হয় তাকে।

নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আকরামের ছেলে বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। এজাহারে অভিযুক্তরা হলেননান্টু (২৮), বিশাল (২৮), খোকন মিয়া (২৮), তাসিন হোসেন (২৫), অমি (২০), নাহিদ (২৫) শিশির (২০) এদের প্রত্যেকেই তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা।

আকরামের চাচাতো ভাই মো. ইসলাম বলেন, “একটি তুচ্ছ ঘটনায় তারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে,আমরা চাই খুনিদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।

আকরামের স্ত্রী মুক্তি বেগম বলেন, “আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই। ওরা যেন কোনোভাবেই জামিন না পায়।”আর মেয়ে  বলেন, “প্রাইভেট পড়ে ফেরার সময় আমাকে গালি দেয় নান্টু। আমি বাসায় গিয়ে বাবাকে বলি। বাবা প্রতিবাদ করতে গেলে ওরা মাবধর করেবাবাকে হারালাম, এই কষ্ট ভুলতে পারব না। আমি চাই ওদের ফাঁসি হোক।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ বলেন, ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।