আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যার সৃষ্টি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্দেশে। নিজের গড়া সেই ট্রাইব্যুনালেই আজ মৃৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা হলো স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার।
সোমবার ট্রাইব্যুনালের আনা মোট পাঁচ অভিযোগের দ্বিতীয়টিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রথম অপরাধে দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ড।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করেছেন। অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন- পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
মানবতাবিরোধ অপরাধের এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাজসাক্ষী হওয়ায় আরেক আসামি আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড হলো, সেটিতে প্রথম অভিযোগপত্র জারি করা হয় ২০১০ সালে। গত ১৫ বছরের বেশি সময়ে এই ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ৫৭টি মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে।
এর মধ্যে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল ছয়জনের। যাদের মধ্যে পাঁচজন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং একজন বিএনপির।
গত বছর হাসিনা সরকারের পতনের পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে পুনর্গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যেখানে হাসিনা ছাড়াও তার সময়ের প্রভাবশালী নেতা, মন্ত্রী এবং আমলাদেরও বিচার হচ্ছে।